আজ রবিবার, ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

স্থান-কাল-ভেদ মানছে না ধূমপায়ীরা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
সুলতানা আক্তার ফুটপাতে নাক চেপে হাঁটছেন। তাঁর সামনের পথচারী হাঁটতে হাঁটতে ধূমপান করছেন। পেছনের পথচারীদের মুখে সে ধোঁয়ার ঝাপটা লাগছে। খারাপ লাগলেও কেউ কিছু বলছেন না। সুলতান আক্তার বলেন, ‘ফুটপাতে হাঁটার সময় বা রাস্তায় বাসের জন্য দাঁড়ালে অনেক সময় সিগারেটের ধোঁয়া খেতে হয়! ক্ষতি হলেও করার কিছু থাকে না।’

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে উন্মুক্ত স্থানে ধূমপানের আধিক্য চোখে পড়েছে। ফুটপাতে, পার্কে, মার্কেটের সামনে যেখানে জনসমাগম সেখানেই দেখা গেছে কেউ না কেউ ধূমপান করছে। অনেক সময় ফুটপাতে হাঁটার সময় ধূমপায়ীর হাতে থাকা সিগারেটের আগুন অন্য পথচারীদের হাতে, গায়ে লাগছে। চোখ শক্ত করে একবার তাকানো ছাড়া আর কিছু করার থাকে না বলে জানালেন একাধিক ভুক্তভোগী।

আইন অনুযায়ী, জনপরিসরে বা উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ। কেউ এমন স্থানে ধূমপান করলে অনধিক ৩০০ টাকা জরিমানা করার বিধান আছে। একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে তিনি দ্বিগুণ হারে দন্ডিত হবেন। আইনে সিগারেটের দোকান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০ গজ দূরে থাকতে হবে বলে বলা হয়েছে। সম্প্রতি এই আইন না মানার প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫এর ২(চ) ধারা অনুসারে পাবলিক প্লেস বলতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান; সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস; গ্রন্থাগার, লিফট, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, আদালত, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, নৌবন্দর, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, প্রেক্ষাগৃহ, প্রদর্শনী কেন্দ্র, থিয়েটার হল, বিপণিবিতান, রেষ্টুরেন্ট, পাবলিক টয়লেট, শিশুপার্ক, মেলা বা পাবলিক পরিবহনে আরোহণের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সারি, জনসাধারণের সম্মিলিত ব্যবহারের স্থান বোঝায়।

অন্তত ১০ জন পথচারী নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা ধূমপান নিয়ন্ত্রণে আইন আছে শুনেছেন, কিন্তু প্রয়োগ হতে দেখেননি। তাঁরা বলেন, ধূমপায়ীরা স্থান-কাল মানেন না। অনেক সময় হাতে সিগারেট লেগে পুড়ে যায়। শহরের যেখানে সেখানে লোক সমাগমের জায়গায় সিগারেটের দোকান, ভ্রাম্যমাণ দোকানে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। তাঁরা মনে করেন, মানুষের কাছে সহজলভ্য হয়ে গেছে বলে ধূমপানের হার বাড়ছে।

বাংলাদেশের যে কেউ যেকোনো দোকানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি করতে পারে। ধূমপানের সামগ্রী বিক্রি করতে গেলে কোনো অনুমোদন লাগে না। এ জন্য আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে আইনে এমন কোনো ধারা নেই। এটিও ধূমপান নিয়ন্ত্রণে পরোক্ষভাবে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তবে ইদানীং আলাপ হচ্ছে, আইনে এই ধারা সংযুক্ত করা হতে পারে। তখন হয়তো জনসম্মুখে ধূমপান কমে যাওয়া এবং তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ।

বিগতে দিনে দুই একবার নগরীর চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারে প্রকাশ্যে ধূমপানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করলেও এখন আর তেমনটা চোখে পড়ছে না। যার কারনে আবারও হরহামেশা প্রকাশ্যেই ধূমপান করছে ধূমপায়ীরা।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাসুম বিল্লাহ জানান, পাবলিক প্লেসে ধূমপান হলে সেক্ষেত্রে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকি। এ বিষয়ে আমাদের সরকারী কর্মকর্তারা সোচ্চার রয়েছে। সেই সকল ধূমপায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান সব সময় অব্যাহত থাকবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ